চিনির বাজারেও কারসাজি

চিনির বাজারেও কারসাজি

চিনির বাজারেও কারসাজি
চিনির বাজারেও কারসাজি

অনলাইন ডেস্ক: চিনির বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য অতীতে বহু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও ভোক্তাদের দুর্ভোগের অবসান হয়নি; বাড়তি দামেই চিনি ক্রয় করতে হয়েছে তাদের।কয়েকদিন আগেই এ নিত্যপণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে।

কাজেই এখন বাজারে চিনির দাম কমার কথা, কিন্তু উলটো পণ্যটির দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা বেড়ে চিনি খুচরা বাজারে এখন কেজিপ্রতি ১৪৫-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; পাড়া-মহল্লার দোকানে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৫৫ টাকায়। সাত দিন আগেও পাড়া-মহল্লার দোকানে পণ্যটি বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১৪০ টাকায়; এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১৩৫ টাকায়।

সোমবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে ৯.৪৩ শতাংশ। ২ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাঁচা ও পরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক কমিয়ে অর্ধেক করেছে। বাজারে চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বাস্তবে তা কাজে আসেনি। দাম না কমে কেন বেড়েছে, তা দ্রুত খতিয়ে দেখা দরকার।

তা না হলে পরিস্থিতি আরও বেসামাল হতে পারে। চিনি, ভোজ্যতেল-এসব পণ্য নিয়ে অতীতে অসাধু ব্যবসায়ীরা বারবার কারসাজি করলেও কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ফলে ভোক্তাদের বাধ্য হয়ে বাড়তি দামেই এসব পণ্য কিনতে হয়েছে। কয়েকদিন পরপর অসাধু ব্যবসায়ীরা একেকটি পণ্যের বাজার অস্থির করে তুললেও এক্ষেত্রে বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর ভূমিকা হতাশাজনক। জানা যায়, পাইকারি পর্যায়ে ডিলাররা চিনি সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন, পাশাপাশি বাড়িয়েছেন দাম। ফলে বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীদের। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েছে, ডলার সংকটে চিনি আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে-এসব অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা চিনিসহ নিত্যপণ্যের বাজারে ভয়াবহ অস্থিরতা সৃষ্টি করবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।

দেশে বেশ কয়েকটি চিনিকল রয়েছে। এগুলো সচল থাকলে চিনির ওপর আমাদের আমদানিনির্ভরতা কমানো যেত। দুর্নীতি ও অব্যবস্থার কারণেই দেশের চিনিকলগুলো পরিণত হয়েছে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে। ফলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে অনেক চিনিকলে। বাজারে দেশি চিনির (আখের চিনি) চাহিদা ব্যাপক। কিন্তু বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগসাজশের কারণে তা ঠিকমতো সরবরাহ না করার অভিযোগ রয়েছে। ক্রেতারা দেশি চিনি না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যান এমন খবর প্রকাশের পরপরই জানা যায়, বিভিন্ন মিলে বিপুল পরিমাণ দেশি চিনি অবিক্রীত রয়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা দরকার। এমনিতেই নিত্যপণ্যের দামের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। তার ওপর বাজারে কারসাজি চলতে থাকলে এ শ্রেণির মানুষ বাঁচবে কীভাবে?

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply